বোবায় ধরা আসলে কী ?

অনেকে বলে থাকেন রাতে তিনি যখন ঘুমান তখন অনেক সময় এমন মনে হয় যেন কেউ তার বুকে চেপে বসে আছে। এসময় তার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বেশ ভয় ভয় লাগে।  কেউ যদি তাকে ডেকে দেয় তবে এ চেপে ধরা ভাবটি চলে যায়। অনেকে এটাকে বলেন খারাপ জিনের কাজ, খারাপ জিন নাকি যে সকল মানুষকে পছন্দ করে না ঘুমের সময় তাদের বুকে চেপে ধরে,  তাদের কন্ঠ চেপে ধরে ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।  এটাকেই বলে বোবায় ধরা।
আমার নিজেরও বহুবার এ অভিজ্ঞতা হয়েছে। সত্য বলতে এটা বেশ ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। আমার যেটা হয় তা হলো,  মনে হয় ঘরের মধ্য কেউ হেটে বেরাচ্ছে, কখনও কখনও মনে হয় কেউ আমার বিছানায় উঠে বসেছে, আমাকে চেপে ধরার চেষ্টা করছে,আশে পাশে কি হচ্ছে তা পরিস্কার বুঝতে পারি কিন্ত ঘুম হতে জাগতে পারি না,খুব ভয় লাগে, হার্টবিট বেরে যায়, কেউ ডেকে দিলে তাৎক্ষনিক এ অবস্থা হতে মুক্তি পাই। নিজের কারনেই বিভিন্ন জায়গা ঘেটে বোবায় ধরার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এরকম

বোবায় ধরা আসলে মানুষের ঘুমের মধ্যে এক ধরনের সাময়িক প্যারালাইসিস অবস্থা, যাকে বল স্লীপ  প্যারালাইসিস। মানুষের ঘুমের ধরন থাকে প্রধানত দু ধরনের
১। গভীর ঘুম
২।হালকা ঘুম
প্রধানত হালকা ঘুমের সময়ই স্লীপ প্যারালাইসিস অবস্থা বে শি দেখা যায়।  এ সময় হটাৎ যখন একজন ব্যাক্তি ঘুমন্ত অবস্থা থেকে সজাগ হতে যায় তখন মস্তিস্ক সজাগ হলেও তার শরীর তখনও সজাগ হয়ে ওঠে না,ফলে মস্তিস্ক কাজ করলে শরীর তখনও কাজ করতে পারে না, অনেকটা প্যারালাইসিস অবস্থার মত হয়। বিষয়টা অনেকটা নিউটনেন গতির জড়তা সুত্রের মত।গতিশীল বস্ত গতিশীল আর স্থির বস্ত স্থির থাকতে চায় যতক্ষন বাহ্যিক বল প্রয়োগ করা হয়। তেমনই স্লীপ প্যারালাইসিস অবস্থার সময়  কেউ যখন ধাক্কা দিয়ে সজাগ করে দেয় তখন তার শরীরও ঘুমন্ত অবস্থা হতে সজাগ হয়ে যায় বিধায় বোবায় ধরা অবস্থাটি কেটে যায়। বৈজ্ঞানিক ভাবে চিন্তা করলে এটা আসলে কোন জিনের কাজ নয়,  সাময়িক শারিরীক একটি সমস্যা।
কেন এটা হয় ----
১। অধিক দুুশ্চিন্তা করলে
২। শরীর বেশি ক্লান্ত থাকলে
৩।পর্যাপ্ত ঘুম না হলে
৪। এ বিষয়টি অযথা চিন্তা করলে
৫। যে কোন এক ভঙ্গিমায় দীঘর্ক্ষন শুয়ে থাকলে

তবে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যাই বলুক আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা হতে বলতে পারি রাতে বেলা ঘুমবার সময় অযু করে কিছু দোয়া কালাম পরে ঘুমোলে এটা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। এমনকি যখন এ অবস্থাটি হঢ তখন মনে মনে দোয়া পড়তে পারলেও কাজ দেয়। কেউ কেউ বলবেন এটা হয়ত আমার বিশ্বাস যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তাদের আমি বলব আমার একটি বিশ্বাস যদি আমাকে ভাল রাখে তাতে বিশ্বাস রাখাটা দোষের নয় বরং যুক্তিযুক্ত। সুতরাং সবাইকে বলব আল্লাহর পোতি বিশ্বাস রাখুন আর দোয়া পড়ে ঘুমোতে যান।

Comments

Popular posts from this blog

গড় বেতন ও অর্ধ গড় বেতন কাকে বলে এবং কীভাবে তা হিসাব করবেন।

নথিতে/অফিসিয়াল চিঠিতে ডিজিটাল স্মারক নং দেবার পদ্ধতি ও ব্যাখ্যা

জনস্বার্থে বদলীকৃত সরকারি কর্মচারিদের প্রকৃত যোগদানকাল নির্নয় করবেন যেভাবে