দ্য ফিল্ড টুইনস যাদের নামে নামকরন হয় একটি রোগের নাম দা ফিল্ড ডিজিজ
![]() |
ক্যাথরিন ও ক্রিস্টি ফিল্ড |
আমরা প্রত্যেকেই হয়ত চাই মৃত্যুর পরও আমার নামটি অমর হয়ে থাকুক। আপনার নামে যদি কোন কিছুর নামকরণ করা হয় তাহলে সাধারণত আপনার অখুশি হবার কথা নয়।কিন্তু যদি আপনার নামটি কোন রোগের সঙ্গে জুড়ে যায় তাহলে নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবেনা। কিন্তু এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ক্যাথরিন এবং কৃষ্টি ফিল্ড নামের ওয়েলস এর লেনালি শহরের সদা হাস্যজ্জল জমজ দুই বোনের জীবনে। ফিল্ড ডিজিজ "দা ফিল্ড কন্ডিশন " এমন একটি বিরল রোগ যার নামকরণ করা হয়েছে এই দুই বোনের নামের টাইটেল থেকে। এই রোগটা এতটাই বিরল যে তারাই পৃথিবীতে শুধুমাত্র দুই জন মানুষ যাদের এই রোগ রয়েছে।
জন্ম ও শৈশব কাল : ওয়েলস এর লেনালি শহরে জন্ম এই দুই জমজ বোনের। জন্মের পর তারা আর সকল বাচ্চার মতোই স্বাভাবিক ছিল। তিন বছর বয়স পর্যন্ত তাদের সকল কর্মকাণ্ড, হাঁটা-চলা কথা বলা সবই স্বাভাবিক ছিল। সমস্যা ধরা পড়ে তাদের চার বছর বয়সে, যখন তারা হাঁটতে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলত। এরপরও হামাগুড়ি দেওয়া, কথা বলা, গান গাওয়া, বাইক চালানোর মতো স্বাভাবিক কাজ গুলো তারা বেশ সচ্ছন্দেই শিখে ফেলে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের সমস্যাগুলো প্রকট হতে থাকে। সাত বছর বয়সে তারা তাদের স্বাভাবিক কর্মকান্ড করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং এই সময়ে তারা হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে শুরু করে। ১৪ বছর বয়সে গিয়ে তারা তাদের কথা বলার ক্ষমতা কোন কিছু করতে পারার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সম্প্রতি তাদের স্টমাক এর সাথে এক ধরনের পাইপ লাগানো হয়েছে যাতে তারা খাবার খেতে পারে।
ফিল্ড কন্ডিশন আসলে কী: ফিল্ডে ডিজিজ আসলে একটি নিউরো মাসকুলার ডিজঅর্ডার। এটি জিনগত কোন সমস্যা যা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত নাকি ভাইরাস জনিত নাকি রূপান্তরিত কোন সমস্যা তা ডাক্তারদের নিকট এখনো অজানা। রোগটির এই বিরলতার কারণেই ডাক্তাররা এর নাম দিয়েছেন ফিল্ড কন্ডিশন। এই দুই জমজ বোনের দিনে ১০০টিরও বেশি করে মাসল স্পাজম হয় যা অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক ও অসহ্যকর।তবে কেন এটি হয় তা ডাক্তারদের নিকট আজও অজানা।
![]() |
শিশুকালে ক্যাথরিন ও ক্রিস্টি |
![]() |
১৮ তম জন্মদিনে |
জীবন বোধ: যদিও এটি একটি অত্যন্ত বিরল রোগ এবং বেশ কষ্টদায়ক তবু এই রোগটি ক্রিস্টি এবং ক্যাথরিনের ব্রেনের উপরে কোন প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়নি। আর এমন একটি রোগের সঙ্গে ওঠাবসা করেও ক্যাথরিন এবং কৃষ্টি তাদের মানবিক গুনাবলী গুলি হারিয়ে ফেলেন নি।ইলেকট্রনিক্স স্পিচ স্পিকিং মেশিন পাবার পর কৃষ্টি বলেছিলেন যে, তিনি প্রথম যে প্রশ্নগুলি করেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল, "মা তুমি কি এখনো বাবার সাথে সেক্স করো? "এই একটি প্রশ্ন হতেই বোঝা যায় তারা তাদের মানবিক সকল গুনাবলী গুলি বিদ্যমান ছিল।যদিও রোগটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক তারা দুই বোনই সবসময় হাস্যোজ্জ্বল থাকে যাতে তাদের মা কষ্ট না পান। তারা পরস্পরকে বলে, I know it's hard but keep smiling. তাদের জীবন বোধের একটি চমৎকার কথা হলো তারা বলে, Dont feel sorry for us.
Life is too short to spend time feeling blue. Have some fun. Do something crazy once in a while. Love laugh, live and always wear a smile.
![]() |
নিজেদের তৈরি ডকুমেন্টরিতে |
রোগের ভবিষ্যৎ ও চিকিৎসা : এই রোগটা এতটাই বিরল যে এই সম্পর্কে ডাক্তাররা এখনো পর্যন্ত কিছুই জানেন না। ক্যাথরিন ও ক্রিস্টি কতদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে সে বিষয়ে ডাক্তাররা যথেষ্ট সন্দিহান।যেহেতু রোগটি সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত তেমন কিছু জানা যায়নি তাই এই রোগ টির কোন সুচিকিৎসাও আবিষ্কৃত হয় নি।
Comments
Post a Comment